Thursday , March 16 2023

বিভিন্ন প্রকার ভেজাল সার চেনার উপায় ও সারের নাম ও কাজ

বিভিন্ন প্রকার ভেজাল সার চেনার উপায়ঃ 

ভেজাল সার চেনার উপায়

অধিক ফসল উৎপাদনের জন্য উচ্চ ফলনশীল ও হাইব্রিড জাতের চাষ বৃদ্ধি পেয়েছে। ফসল উৎপাদনের জন্য বিভিন্ন রাসায়নিক সার ব্যবহার করতে হচ্ছে। তবে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী সারে ভেজাল দ্রব্য মিশিয়ে নকল সার বা ভেজাল সার তৈরি ও বিক্রি করছেন। কৃষকভাইয়েরা একটু সতর্ক হলেই আসল সার ও ভেজাল সারের পার্থক্য বুঝতে পারবেন। এখানে কয়েকটি সহজ পরীক্ষার মাধ্যমে আসল বা ভেজাল সার শনাক্ত করার উপায় সম্পর্কে জানানো হলো:

ইউরিয়া সার চেনার উপায়:

আসল ইউরিয়া সারের দানাগুলো সমান হয়। তাই কেনার সময় প্রথমেই দেখে নিতে হবে যে সারের দানাগুলো সমান কিনা। ইউরিয়া সারে কাঁচের গুড়া অথবা লবণ ভেজাল হিসাবে যোগ করা হয়। চা চামচে অল্প পরিমান ইউরিয়া সার নিয়ে তাপ দিলে এক মিনিটের মধ্যে অ্যামোনিয়ার ঝাঁঝালো গন্ধ তৈরি হয়ে সারটি গলে যাবে। যদি ঝাঁঝালো গন্ধ সহ গলে না যায়, তবে বুঝতে হবে সারটি ভেজাল।

টিএসপি সার চেনার উপায়:

টিএসপি সার পানিতে মিশালে সাথে সাথে গলবে না। আসল টিএসপি সার ৪ থেকে ৫ ঘন্টা পর পানির সাথে মিশবে। কিন্তু ভেজাল টিএসপি সার পানির সাথে মিশালে অল্প কিছুক্ষণের মধ্যেই গলে যাবে বা পানির সাথে মিশে যাবে।

ডিএপি সার চেনার উপায়:

ডিএপি সার চেনার জন্য চামচে অল্প পরিমান ডিএপি সার নিয়ে একটু গরম করলে এক মিনিটের মধ্যে অ্যামোনিয়ার ঝাঁঝালো গন্ধ হয়ে তা গলে যাবে। যদি না গলে তবে বুঝতে হবে সারটি সম্পূর্ণরুপে ভেজাল। আর যদি আংশিকভাবে গলে যায় তবে বুঝতে হবে সারটি আংশিক পরিমান ভেজাল আছে। এছাড়াও কিছু পরিমান ডিএপি সার হাতের মুঠোয় নিয়ে চুন যোগ করে ডলা দিলে অ্যামোনিয়ার ঝাঁঝালো গন্ধ বের হবে। যদি অ্যামোনিয়ার ঝাঁঝালো গন্ধ বের না হয় তাহলে বুঝতে হবে সারটি ভেজাল।

এমওপি বা পটাশ সার চেনার উপায়:

পটাশ সারের সাথে ইটের গুড়া ভেজাল হিসাবে মিশিয়ে দেয়া হয়। গ্লাসে পানি নিয়ে তাতে এমওপি বা পটাশ সার মিশালে সার গলে যাবে। তবে ইট বা অন্য কিছু ভেজাল হিসাবে মিশানো থাকলে তা পানিতে গলে না গিয়ে গ্লাসের তলায় পড়ে থাকবে। তলানি দেখে সহজেই বুঝা যাবে সারটি আসল নাকি ভেজাল।

জিংক সালফেট সার চেনার উপায়:

জিংক সালফেট সারে ভেজাল হিসাবে পটাশিয়াম সালফেট মেশানো হয়। জিংক সালফেট সার চেনার জন্য এক চিলতে জিংক সালফেট হাতের তালুতে নিয়ে তার সাথে সমপরিমান পটাশিয়াম সালফেট নিয়ে ঘষলে ঠান্ডা মনে হবে এবং দইয়ের মতো গলে যাবে।

বিভিন্ন সারের নাম ও কাজ

ইউরিয়া সারের কাজ :

ইউরিয়া একটি নাইট্রোজেন জাতীয় রাসায়নিক সার যা ফসলের ক্ষেতে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়। ইউরিয়া সারে নাইট্রোজেনের পরিমাণ 46%। ইউরিয়া সার নাইট্রোজেন প্রদান করে যা মূলের বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। গাছপালা এবং শাকসবজির পর্যাপ্ত পরিমাণে পাতা, ডালপালা এবং ডালপালা উৎপাদনে সাহায্য করে।

টিএসপি সারের কাজঃ

টিএসপি (ট্রিপল সুপার ফসফেট) এবং ডিএপি (ডায়ামোনিয়াম ফসফেট) উভয়ই ফসফেট সার। এই উভয় সারে 20% ফসফরাস রয়েছে। টিএসপিতে 13 শতাংশ ক্যালসিয়াম এবং 1.3 শতাংশ সালফার রয়েছে। ডিএপি-তে ফসফেট ছাড়াও 18% নাইট্রোজেন থাকে, যার কারণে ডিএপি সার প্রয়োগে প্রতি বিঘা প্রতি 5 কেজি কম ইউরিয়া সার প্রয়োজন হয়।

পটাশ সারের কাজ:

এমওপি বা মিউরেট অফ পটাশ 50 শতাংশ পটাশিয়াম রয়েছে। MOP উদ্ভিদ কোষের ব্যাপ্তিযোগ্যতা রক্ষা করে। উদ্ভিদে কার্বোহাইড্রেট বা প্রোটিন পরিবহনে সহায়তা করে। আয়রন এবং ম্যাঙ্গানিজের কার্যকারিতা বাড়ায়। উদ্ভিদে প্রোটিন বা আমিষ উৎপাদনে সাহায্য করে। উদ্ভিদে জলের শোষণ, আত্তীকরণ এবং চলাচলে অংশ নেয় অর্থাৎ সামগ্রিক নিয়ন্ত্রণ।

জিংক সালফেট জিপসাম সারে কাজঃ

জিপসাম সারে শতকরা ১৭ ভাগ গন্ধক এবং ২৩ ভাগ ক্যালসিয়াম রয়েছে। জিপসাম বা গন্ধ প্রোটিন বা আমি বন্ধনে সহায়তা করে। তেল চাপ জোর বৃদ্ধি করে। গন্ধক ক্লোরোফিল গঠনে ভূমিকা গঠন এবং গাছের বর্ণ সবুজ রাখতে সহায়তা করে। বীজমূল এবং হরমোনের কার্যকারিতা বাড়াতে সহায়তা করে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *